দেশের সব সরকারি ভবনের ছাদে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে সোলার প্যানেল বসানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত ‘জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচি’ শীর্ষক বৈঠকে তিনি এই নির্দেশনা দেন।
বৈঠকে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক নবায়নযোগ্য জ্বালানি সংস্থা (আইআরএনইএ)-এর ২০২৪ সালের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশ সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে পিছিয়ে আছে। উদাহরণস্বরূপ, ভারতে মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ২৪ শতাংশ, পাকিস্তানে ১৭.১৬ শতাংশ এবং শ্রীলঙ্কায় ৩৯.৭ শতাংশ সৌরবিদ্যুৎ থেকে আসে। অথচ বাংলাদেশে এ হার মাত্র ৫.৬ শতাংশ।
নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালা অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ২০ শতাংশ এবং ২০৪০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে পূরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এই লক্ষ্যে ৫২৩৮ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৫৫টি স্থলভিত্তিক সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে, যা ২০২৮ সালের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকে বলেন, দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য রুফটপ সোলার প্রকল্প হাতে নিতে হবে। সরকারি ভবন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং হাসপাতালের ছাদে সোলার প্যানেল বসানোর কার্যক্রম শুরু করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এই প্রকল্প বেসরকারি খাতে বাস্তবায়নের বিষয়টিও বিবেচনায় আনা যেতে পারে। সরকার ছাদ দেবে, আর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ করবে। এতে করে সরকারি খরচ কমবে এবং কার্যকারিতা বাড়বে।
তিনি বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে রুফটপ সোলার স্থাপন করেছে, তাদের অভিজ্ঞতা বিশ্লেষণ করে সম্ভাব্য সমস্যাগুলো চিহ্নিত ও সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে।
এ প্রকল্পের আওতায় সরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাগুলো বিদ্যুৎ ব্যবহারে বিলমুক্ত হবে এবং ছাদ ব্যবহারের জন্য প্রতিষ্ঠানগুলো ভাড়াও পাবে।
বৈঠকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, বিডা চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং বিদ্যুৎ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।