জোড়া কলা খেলে যমজ সন্তান হয়?

আজকের মতামত ডেস্ক
 ছবি:
ছবি:

গ্রামীণ সমাজে বহুদিন ধরেই নানা কুসংস্কার ও লোকবিশ্বাসের প্রচলন রয়েছে। এরই একটি হলো—জোড়া কলা খেলে যমজ সন্তান হয়। এই ধারণা এতটাই প্রচলিত যে অনেক পরিবারে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জোড়া কলা খেতে বারণ করা হয়। আবার কেউ কেউ যমজ সন্তানের আশায় জোড়া কলা খেয়ে থাকেন।

কিন্তু প্রশ্ন হলো—এই বিশ্বাসের পেছনে কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে কি?

বিজ্ঞানের ভাষায়, উদ্ভিদের এমন অস্বাভাবিক গঠনকে ‘ফ্যাসিয়েশন’ বলা হয়। এটি একটি জিনগত বা পরিবেশগত বিকৃতি, যেখানে কোষ বিভাজন ঠিকমতো না হয়ে ফুল, কাণ্ড বা ফল চ্যাপ্টা আকারে একে অপরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। কলা গাছে যখন মোচার ভেতরে থাকা একাধিক ফুল একত্রিত হয়ে ফল ধরে, তখনই তৈরি হয় জোড়া কলা।

অর্থাৎ, এটি শুধুমাত্র গাছের জৈবিক গঠনগত একটি বিষয়, যার সঙ্গে মানুষের সন্তান ধারণ বা যমজ সন্তানের কোনো সম্পর্ক নেই।

যমজ সন্তান কীভাবে হয়?

চিকিৎসাবিজ্ঞানের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, যমজ সন্তান জন্ম একটি স্বাভাবিক ও জটিল জৈবিক প্রক্রিয়া। এটি মূলত দুই ধরনের হয়:

ফ্রেটারনাল টুইন (ভ্রাতৃসদৃশ যমজ):
যখন নারীর শরীরে একসঙ্গে দুটি ডিম্বাণু বের হয় এবং তা ভিন্ন দুটি শুক্রাণুর দ্বারা নিষিক্ত হয়, তখন দুটি আলাদা ভ্রূণ তৈরি হয়। এ ধরনের যমজ দেখতে আলাদা হয় এবং লিঙ্গও ভিন্ন হতে পারে।

আইডেন্টিক্যাল টুইন (অভিন্ন যমজ):
একটি ডিম্বাণু একটি শুক্রাণুর মাধ্যমে নিষিক্ত হওয়ার পর যদি ভ্রূণটি দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়, তখন জন্ম নেয় অভিন্ন যমজ। তারা দেখতে একই রকম, লিঙ্গও হয় অভিন্ন।

এ দুটি প্রক্রিয়াই নারীর শরীরের জৈবিক কার্যক্রমের অংশ, যার সঙ্গে কোনো ফল খাওয়া বা নির্দিষ্ট খাদ্য গ্রহণের সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই।

জোড়া কলা খেলে যমজ সন্তান হবে—এই বিশ্বাস কেবলই লোককথা। এর পেছনে কোনো বৈজ্ঞানিক সত্যতা নেই। তাই স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে এটি নিছক কুসংস্কার ছাড়া কিছু নয়।

সূত্র: আজকাল

বিষয়:

এলাকার খবর

সম্পর্কিত