কাঁঠাল একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর ও উপকারী ফল। এতে রয়েছে বিভিন্ন খনিজ, ভিটামিন এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা শরীরের জন্য খুবই দরকারি। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, হজমশক্তি উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে। এমনকি হৃদরোগ, কোলন ক্যানসার এবং পাইলসের মতো সমস্যাতেও কাঁঠাল উপকারী হিসেবে বিবেচিত।
বাংলাদেশে কাঁঠালকে 'পুষ্টির রাজা' এবং ‘গরিবের খাবার’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। তবে উপকারের পাশাপাশি কিছু মানুষের ক্ষেত্রে কাঁঠাল খাওয়া বিপদের কারণও হতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, কাদের কাঁঠাল খাওয়া উচিত নয়।
১. অ্যালার্জির সমস্যায় যারা ভোগেন
কাঁঠালে থাকা পোলেন ও ল্যাটেক্স কিছু মানুষের দেহে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে যাঁদের আগে থেকেই অ্যালার্জি রয়েছে, তাঁদের কাঁঠাল খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।
২. ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ
কাঁঠালের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জিআই) তুলনামূলকভাবে বেশি। ফলে এটি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দিতে পারে। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বা প্রিডায়াবেটিক অবস্থায় থাকা ব্যক্তিদের জন্য বেশি কাঁঠাল খাওয়া ক্ষতিকর হতে পারে।
৩. অস্ত্রোপচারের (সার্জারি) আগে ও পরে
সার্জারির আগে বা পরে কাঁঠাল খাওয়া ঠিক নয়। কারণ এটি শরীরে ওষুধের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে। তাই অপারেশনের আগে বা পরবর্তী সময় এই ফল এড়িয়ে চলাই ভালো।
৪. গর্ভাবস্থা ও স্তন্যদানকালীন সময়ে
গর্ভাবস্থায় অল্প পরিমাণ কাঁঠাল খাওয়া নিরাপদ হলেও অতিরিক্ত খেলে জটিলতা দেখা দিতে পারে। তেমনি স্তন্যদানকালে অতিরিক্ত কাঁঠাল খাওয়াও উপযুক্ত নয়। এই সময়ে ডায়েট পরিকল্পনায় কাঁঠাল রাখার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
কতটুকু কাঁঠাল খাওয়া নিরাপদ?
সাধারণভাবে, সুস্থ একজন মানুষ দিনে ২ থেকে ৩টি কাঁঠালের কোয়া খেতে পারেন। তবে ডায়াবেটিস বা অন্য কোনো জটিলতা থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাবেন।
কাঁঠাল যাদের জন্য উপকারী
কাঁঠালে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যানসারের অগ্রগতি রোধে সহায়ক হতে পারে। এতে থাকা উচ্চ মাত্রার ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়, যা হেমোরয়েড বা পাইলসের সমস্যায় উপশম দিতে পারে।
প্রাকৃতিকভাবে উপকারী হলেও কাঁঠাল খাওয়ার সময় ব্যক্তিগত শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করা জরুরি। উপকার পেতে চাইলে পরিমাণমতো এবং সঠিক পরিস্থিতিতে কাঁঠাল খান।